Home আন্তর্জাতিক ইসরায়েল–ইরান যুদ্ধ: মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

ইসরায়েল–ইরান যুদ্ধ: মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

পরমাণু হুমকি, সামরিক পাল্টা আক্রমণ এবং আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কেন্দ্রে ইসরায়েল–ইরান সংঘাত

124
0

২০২৫ সালের জুন মাসে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার আগুন জ্বলে ওঠে যখন ইসরায়েল “Operation Rising Lion” নামে একটি গোপন অভিযানে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসমূহে হামলা শুরু করে। এই অভিযানে লক্ষ্য ছিল মূলত ইরানের নাতাঞ্জ, ফোর্ডো ও ইসফাহান অঞ্চলের গবেষণা ও সমরাস্ত্র কেন্দ্রগুলো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, এই অভিযানে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন এবং স্টিলথ ফাইটার জেট ব্যবহার করা হয়।

ইরান এই হামলাকে ‘পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ ঘোষণার সমান’ বলে অভিহিত করেছে এবং তার জবাবে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও স্ব-নিয়ন্ত্রিত ড্রোন ব্যবহার করে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি এবং রাজধানী তেল আবিবে পাল্টা হামলা চালায়। এই পাল্টা আক্রমণে ইসরায়েলের বেশ কিছু সেনা সদস্য হতাহত হয় এবং বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও ঘটে।

সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট চিত্র ও ভেতরের সংবাদসূত্র অনুযায়ী, ইরানে অন্তত তিনটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। ইরানের একাধিক উচ্চপদস্থ বিজ্ঞানী ও সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক মিডিয়া, যার মধ্যে রয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন রেজাইও।

মধ্যপ্রাচ্যের এই সংঘর্ষে শঙ্কা আরও বেড়েছে যখন সিরিয়া ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গ্রুপ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। ইতোমধ্যেই গোলান মালভূমিতে সীমান্ত উত্তেজনা শুরু হয়েছে এবং সেখানে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।

এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা পৃথক বিবৃতি দিয়ে উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার এক বক্তব্যে বলেন, “এটি এখনো কোনো প্রকৃত শান্তির লক্ষণ নয়। এটি রক্তপাতের সূচনা মাত্র।”

বিশ্লেষকদের মতে, যদি এই সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে তা কেবল মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিকেই নয়, বরং বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার, সুরক্ষা রাজনীতি ও পরমাণু অস্ত্র বিস্তার চুক্তি (NPT)-তেও গভীর প্রভাব ফেলবে।

বিশ্ববাজার ইতোমধ্যেই প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম $৭৪ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় $৮০ প্রতি ব্যারেলে। এতে করে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি খরচ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এখনো পর্যন্ত কোন পক্ষই এই সংঘর্ষ থামানোর উদ্যোগে সফল হয়নি। যদিও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়েছে, কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত আরও জটিল হয়ে উঠছে। এই যুদ্ধ যদি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে রূপ নেয়, তাহলে এটি হতে পারে আধুনিক যুগের সবচেয়ে বড় মানবিক ও রাজনৈতিক সংকটের সূচনা।


পথচিহ্ন

সংক্ষিপ্ত সূত্র: Th

e Guardian, AP News, Al Jazeera, BBC, Times of Israel, Reuters

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here